ময়মনসিংহ নগরীর জে সি গুহ রোড এলাকায় সন্তান সম্ভাবা এক গৃহবধূ সোমা বেগম (২৫)-কে গত ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে তার স্বামী আব্দুল হাকিম ঘরে তালা বন্ধ করে ২য় স্ত্রীর ঘরে চলে যায়। কিন্তু ওই দিন রাত ২টার দিকে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোমা বেগমের পেটে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়। এতো রাতে কাউকে ডাকতেও পারছিলেন না তিনি। শেষে নিজ বুদ্ধি খাটিয়ে ৯৯৯-এ কল করলেন। খবর পেয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দের নির্দেশে ঘটনাস্থলে একদল পুলিশ ঘরের বাথরুমের দেওয়াল ভেঙ্গে সোমা বেগমকে উদ্ধার করে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করান। কিন্তু এতোকিছুর পরও সোমা বেগমের পেটের বাচ্চাটি আর পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়নি। সোমা বেগমের পেটের বাচ্চাটি মিসকারেজ হয়ে গেছে।
এদিকে পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে জানা গেছে যে, সোমবার রাত ২টার দিকে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের জাতীয় জরুরী সেবা নাম্বার ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর আসে যে, ময়মনসিংহ নগরীর জে সি গুহ রোড এলাকার আব্দুল হাকিমের স্ত্রী সোমা বেগমের প্রসব ব্যাথায় কাতরাচ্ছে। সাথে সাথেই ওসি শাহ কামাল আকন্দ এসআই শুভ্র সাহাকে নির্দেশ দিলে সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘরের দড়জার কোন অস্তিত্ত্ব খুঁজে না পেয়ে শেষে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় বাড়ির পিছনে বাথরুমের দেয়াল ভেঙ্গে অন্তঃসত্ত্ব সোমা বেগমকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করান। পরে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সুমা বেগমের মিসকারেজ জনিত কারনে হাসপাতালে ডিএনসি করানো হয়। তবে সোমা বেগমের শরীরে প্রচুর পরিমানে রক্তশূন্যতাসহ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। বর্তমানে সোমা বেগমের অবস্থা ভালো বলে জানিয়েন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
অপরদিকে স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে যে, আব্দুল হাকিমের বাসার সামনে দোকান থাকাতে দোকানের ভিতর দিয়েই তার ঘরে ঢুকতে হয়। আব্দুল হাকিম দুইটি বিয়ে করায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে রেখে সে ওই রাতে তার ২য় স্ত্রীর কাছে যায়। আর ওই রাতেই তার স্ত্রীর প্রসব ব্যাথা উঠলে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকতে না পাড়ায় ৯৯৯-এ কল করে। পরে আব্দুল হাকিমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পুলিশ অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বলেন-৯৯৯-এর জরুরী সেবার মাধ্যমে রাত ২টার দিকে খবর পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি নির্দেশ দেই।