শাহজাহান কবির সাজু, পানছড়ি প্রতিনিধিঃ
কোভিড-১৯ এর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় দীর্ঘ প্রায় আঠার মাস পর বিদ্যালয় মুখী হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ে পাঠদানের ফাঁকে বন্ধুদের সাথে আনন্দে মাতোয়ারা হবে এটাই ছিল ধারণা। কিন্তু ব্যাতিক্রমী দৃশ্য দেখা গেল পানছড়ি উপজেলার কানুনগো পাড়া ও প্রদীপপাড়ার বুক চিরে বয়ে চলা চেংগী নদীর পাড় এলাকায়। চেংগী নদী পার হয়েই প্রদীপপাড়া, কানুনগোপাড়া, হরি গোপালপাড়া, চিত্তররঞ্জন কার্বারী পাড়া, দীনবন্ধু পাড়া, যৌথখামার, বেঙাপাড়া, সিন্ধুকার্বারীপাড়া ও সাঁওতালপাড়া এলাকার শিক্ষার্থী ও শত শত লোকের চলাচলের একমাত্র পথ। এলাকার বসন্ত চাকমার ছেলে স্বপন চাকমা দীর্ঘ প্রায় চৌদ্দ বছর ধরে নৌকা দিয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের বিনা পয়সায় ও এলাকার জনগন যে যা দেয় তা দিয়েই পারাপার করেই নিজের সংসার চালতো কোন রকম। গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে তার নৌকাটি শ্রোতে ভাসিয়ে নিলে বিপাকে পড়ে সবাই। আজ ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার দিনে নদী ঘাটে দেখা যায় পারাপারের করুণ চিত্র। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মানবেতর পারপারের দৃশ্য ছিল মর্মান্তিক। স্বপন চাকমা বাঁশের ভেলায় রশি বেঁধে টেনে কোমলমতিদের পারাপারের সময় কেউ কেউ হেলেধুলে পড়তেও দেখা গেছে। খাগড়াছড়ি টেকনিক্যালে পড়–য়া দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী কনিকা
সাঁওতাল শিশু শিক্ষার্থী এলটি, সোহেলি, পরান্তি, সুষমিতা, রিপা চাকমারা জানায়,অনেক ভয়ে ভয়ে বাঁশের ভেলা চড়ে কোন রকম চেংগী নদী পার হয়েছি। তাদের প্রাণের দাবী জরুরী ভিত্তিতে একটি নৌকা। এলাকার কার্বারী সুমাই সাঁওতাল ও সুশীল বিকাশ চাকমা জানায়, মুমুর্ষরোগী কাঁধে করে পার করা ছাড়া অন্য কোন মাধ্যম নাই। প্রশাসন অন্তত একখানা নৌকা দিলে শিশুরা নির্ভয়ের পাশাপাশি সাধারণ জনগনও সাচ্ছন্দে পার হতে পারতো। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব বলেন, এই প্রতিবেদকের কাছে মানবেতর কাহিনীটা শুনলাম। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে একটা নৌকার ব্যবস্থা করার ব্যাপারে চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, আমি সরেজমিনে যাব। জনগণের পারাপারের জন্য ভালো একটা কিছু করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।